
রাজ্যে এই প্রথমবার মাধ্যমিক পরীক্ষার কারনে প্রাইমারি শিক্ষকদের কাজের চাপ বাড়লো। মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2023) আর দুয়ারে কড়া নাড়ছে না, আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখ থেকে শুরু এবারের পরীক্ষা। অর্থাৎ বলাই যায় পরীক্ষার্থীরা মাধ্যমিকের মোডে ঢুকে গিয়েছে। আজ সোমবার, মাঝে মাত্র দুটো দিন। বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে যাচ্ছে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা।
রাজ্যের ২৭৬৪ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মাধ্যমিকের সিট পড়বে। প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষক প্রয়োজন সুষ্ঠুভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনার জন্য। কিন্তু এই শিক্ষক অর্থাৎ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরিদর্শকদের নিয়ে শেষ মুহূর্তে এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বলতে গেলে এতদিন ধরে চলে আসা নিয়ম সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছে তারা। যা পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে অভিভাবক সকলকেই অবাক করেছে।
একে তো শেষ মুহূর্তে এমন গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, তার ওপর সেই পরিবর্তন নিয়েই একাধিক সংশয়, সবমিলিয়ে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগেই যেন নানান কারণে খবরের শিরোনামে উঠতে শুরু করেছে। এখন প্রশ্ন হল শেষ মুহূর্তে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ হঠাৎ কী এমন সিদ্ধান্ত বদলালো?
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ইনভিজিলেটর অর্থাৎ পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শকের ভূমিকা পালন করতে দেখা যাবে প্রাথমিক শিক্ষকদেরও! এর আগে কোনদিন মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরিদর্শক বা গার্ডের দায়িত্বে প্রাথমিক শিক্ষকরা ছিলেন না।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরাই এতদিন পরিদর্শকের ভূমিকা পালন করে এসেছেন। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্ন বা সেই সংক্রান্ত কোনও বিষয় নিয়ে ছোটখাট সমস্যা দেখা দিলে বা পরীক্ষার্থীর কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে অনেক সময়ই সস্নেহে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন পরিদর্শকরা। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা সেই জায়গায় পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করলে পরীক্ষার্থীরা আদৌ এই সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা পাবে কিনা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সবচেয়ে বড় কথা হল- মাধ্যমিকের সিলেবাস, ভূগোল পরীক্ষায় ম্যাপ পয়েন্টিংয়ের জন্য ম্যাপ বা অঙ্ক পরীক্ষায় গ্রাফ পেপার ইত্যাদি দেওয়া ও এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরাই ভালোভাবে জেনে থাকেন। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা এই সবকিছু থেকে বহু দূরে থাকেন। এমনকি বহু প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক বিশেষ করে প্যারা টিচাররা শুধুমাত্র মাধ্যমিক পাস! এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কতটা সফলভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন ও জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
কেন প্রাথমিক শিক্ষকদের মাধ্যমিক পরীক্ষার পরিদর্শকের ভূমিকায় দেখা যাবে?
মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাথমিক শিক্ষকরা পরিদর্শকের ভূমিকা পালন করলে কী কী সমস্যা হতে পারে তা আমরা প্রথমেই আলোচনা করলাম। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন, কেন প্রাথমিক শিক্ষকদের হঠাৎ করে এই গুরু দায়িত্বে নিযুক্ত করা হচ্ছে? মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর, রাজ্যের বহু জেলার গ্রামীণ এলাকার হাই স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। ফলে গ্রামীণ এলাকার যে সমস্ত পরীক্ষাকেন্দ্রে মাধ্যমিকের সিট পড়েছে সেখানে পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করার মত যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
জানা গিয়েছে, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তর দিনাজপুর জেলার ১১৭ টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে বেশিরভাগই গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত এবং সেগুলিতে শিক্ষকের সঙ্কট ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। তাই এই জেলার ক্ষেত্রেই কেবলমাত্র এককালীন বিশেষ অনুমতি দিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার ইনভিজিলেটর হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষকদেরও ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলার গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষকের সঙ্কট থাকলেও সেখানে অবশ্য প্রাথমিক শিক্ষকদের ব্যবহার করার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরীক্ষার্থীদের চিন্তার কিছু নেই। পর্ষদের গাইডলাইন মেনেই প্রাথমিক শিক্ষকরা পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করবেন।
✅ WHATSAPP GROUP: Click Here
✅ TELEGRAM GROUP: Click Here
🔥 আরো আপডেট- Click Here