পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় শুরু হল ICDS অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগ

দীর্ঘ অপেক্ষা ও দীর্ঘদিন পর অবশেষে পশ্চিমবঙ্গের শুরু হয়ে গেল বিরাট বড় চাকরির নিয়োগ। অনেক দিন ধরে চাকরিপ্রার্থীরা এই নিয়োগের জন্য অপেক্ষারত ছিলেন। যে নিয়োগের কথা বলা হচ্ছে সেটি হল পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় ICDS অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগ। আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে থাকেন এবং সরকারি চাকরির খোঁজ করেন তাহলে এটি অবশ্যই আপনার জন্য বিরাট বড় একটি সুখবর। আপনি কি পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী একজন অষ্টম শ্রেণী পাস বেকার চাকরিপ্রার্থী? পরিবারের আর্থিক অসংগতির কারণে অষ্টম শ্রেণী পাস করার পর আর লেখাপড়া করতে পারেননি? আর বর্তমান যুগে যেহেতু যেকোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে ন্যুনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপদন্ড হল মাধ্যমিক পাস সেই কারণে কোনো চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছেন না? তাই বেকারত্বের জ্বালায় জর্জরিত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন? ভবিষ্যত নিয়ে খুবই চিন্তিত? তাহলে আজকের এই প্রতিবেদনটি একটু মন দিয়ে পড়ুন কারণ আজকের এই প্রতিবেদনই হল আপনাদের মুশকিল আসান। কারন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলিতে এমন দুই ধরনের স্থায়ী পদে কর্মী নিয়োগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে একটিতে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে কোনো উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। ন্যুনতম অষ্টম শ্রেণী পাস করে থাকলেই আপনি এখানে নির্দ্বিধায় চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এখানে অন্য যে আর একটি শূন্যপদ রয়েছে তার জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে ন্যুনতম মাধ্যমিক পাস করে থাকতে হবে। তবে এখানে যে কোনো পদের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রেই চাকরিপ্রার্থীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

নিয়োগকারী সংস্থা ও শূন্যপদ গুলির নাম কি?

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত Office of the Child Development Project Officer এর অফিসের অধীনে রাজ্যের সরকারি স্কুল গুলিতে আবারও নতুন করে দুই ধরনের শূন্যপদে কিছু সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি হল আই.সি.ডি.এস অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী (ICDS Anganwadi Karmi) এবং অন্যটি হল আই.সি.ডি.এস অঙ্গনওয়াড়ী সহায়িকা (ICDS Anganwadi Helper)। 

ALSO READ :   আবারও নতুন করে টেট পরীক্ষা হতে চলেছে রাজ্যে, পরীক্ষার তারিখ জেনে নিন

আবেদনের ক্ষেত্রে কি ধরনের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে?

উপরিউক্ত শূন্যপদ দুটির মধ্যে আই.সি.ডি.এস অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী (ICDS Anganwadi Karmi) পদে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে চাকরিপ্রার্থীকে অবশ্যই কোনো সরকার স্বীকৃত বোর্ড থেকে ন্যুনতম মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে হবে। 

      অন্যদিকে আই.সি.ডি.এস অঙ্গনওয়াড়ী সহায়িকা পদে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে চাকরিপ্রার্থীকে অবশ্যই কোনো সরকারি স্কুল থেকে ন্যুনতম অষ্টম শ্রেণী পাস করে থাকতে হবে।

আবেদনের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়সসীমা কি?

উপরিউক্ত দুটি পদের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রেই আবেদনকারীর বয়স হতে হবে সর্বনিম্ন ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছরের মধ্যে। তবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষিত শ্রেনীর প্রার্থীরা বয়সের কিছুটা ছাড় পাবেন।

মাসিক বেতনের পরিমাণ কত? 

আই.সি.ডি.এস অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী (ICDS Anganwadi Karmi) পদে নিযুক্ত কর্মীদের শুরুতে প্রতি মাসে ৮,২৫০ টাকা করে বেতন দেওয়া হবে। এবং আই.সি.ডি.এস অঙ্গনওয়াড়ী সহায়িকা পদে নিযুক্ত কর্মীদের শুরুতে প্রতি মাসে ৬,৩০০ টাকা করে বেতন দেওয়া হবে। তবে উভয় পদের ক্ষেত্রেই ধীরে ধীরে বেতনের পরিমাণ বাড়বে।

কিভাবে আবেদন করতে হবে?

Office of the Child Development Project Officer এর অফিসের অধীনে অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী ও অঙ্গনওয়াড়ী সহায়িকা পদ দুটিতে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে চাকরিপ্রার্থীকে প্রথমে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে তারপর আবার অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। 

      প্রথমে অনলাইনের মাধ্যমে যেভাবে আবেদন করতে হবে তা হল-

১) সবার আগে এই প্রতিবেদনের একেবারে শেষে দেওয়া অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্কে ক্লিক করতে হবে।

ALSO READ :   Civil Service Exam: সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য মেট্রো সূচিতে বদল! দিনে কখন, কটা ট্রেন? জেনে নিন

২) এরপর ওয়েবসাইট খুললে সেখানে প্রয়োজন মতো তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।

৩) রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের ফর্ম আসবে সেখানে নিজের নাম, বাবার অথবা স্বামীর নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, জেন্ডার, বয়স, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে এবং যে আবেদনকারী যে পদের জন্য আবেদন করবেন তার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পদটিকে সিলেক্ট করে Ok করে Next Button এ ক্লিক করতে হবে।

৪) সবশেষে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্টস সহ অন্যান্য সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই অ্যাপ্লিকেশান হয়ে যাবে।

৫) সবকিছু হয়ে গেলে অ্যাপ্লিকেশান ফর্মের একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিজেদের কাছে রেখে দেবেন।

     অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা হয়ে গেলে অ্যাপ্লিকেশান ফর্মের প্রিন্ট আউট এবং তার সঙ্গে যাবতীয় প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্টস সহ অন্যান্য সব ডকুমেন্টস এর এক কপি করে জেরক্স সেলফ অ্যাটেস্টেড করে একটি খামে ভরে খামের উপর যে পদের জন্য আবেদন করবেন তার নাম লিখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট অফিসে গিয়ে জমা করে আসতে হবে।

আবেদন পত্রের সঙ্গে কি কি গুরুত্বপূর্ণ নথীপত্র জমা দিতে হবে?

অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সময় যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে সেগুলি হল-

১) মাধ্যমিকের অ্যাডমিট বা বার্থ সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।

২) আধার কার্ড/ভোটার কার্ড স্ক্যান করা।

৩) অষ্টম ও মাধ্যমিক পাসের মার্কসীট ও সার্টিফিকেট সহ আরও যদি কোনো উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে তাহলে সেই সব কিছুর মার্কসীট ও সার্টিফিকেট স্ক্যান করা।

৪) কাস্ট সার্টিফিকেট যদি থাকে তাহলে তা স্ক্যান করা।

৫) এক কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করা।

৬) আবেদনকারীর নিজস্ব সিগনেচার স্ক্যান করা।

ALSO READ :   বাংলার ডিএ আন্দোলনকারীদের বিরাট সিদ্ধান্ত! এই দুদিন 'জল বন্ধ' থাকবে গোটা বাংলায়

       অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্রের প্রিন্ট আউট পাঠানোর সময় তার সঙ্গে ও উপরিউক্ত এইসব ডকুমেন্টস গুলির ই এক কপি করে জেরক্স সেলফ অ্যাটেস্টেড করে জমা দিতে হবে।

কিভাবে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হবে?

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পদ দুটিতে চাকরির জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর যে যে ধাপের মধ্য দিয়ে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে তা হল-

১) এক্ষেত্রে প্রথমে আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে থেকে বাছাই করে একটি শর্টলিস্ট প্রকাশ করা হবে। 

২) এই লিস্টে যাদের নাম থাকবে তাদেরকে একটি ৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার জন্য ডেকে নেওয়া হবে। যেখানে মাতৃ ভাষায় রচনা লেখার ওপর থাকছে 15 নম্বর, পাটিগণিতের ওপর 20 নম্বর, পুষ্টি জনস্বাস্থ্য মহিলাদের অবস্থান বিষয়ক প্রশ্ন এর ওপর 15 নম্বর, ইংরেজি ভাষা থেকে 20 নম্বর এবং সাধারণ জ্ঞান থেকে 20 নম্বর।

৩) এই লিখিত পরীক্ষায় যারা যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদেরকে শর্টলিস্ট করে দ্বিতীয় ও অন্তিম ধাপের পরীক্ষা অর্থাৎ ১০ নম্বরের একটি ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হবে। 

৪) এই দুটি ধাপ হয়ে যাওয়ার পর এই দুটি ধাপে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে একটি ফাইনাল মেরিট লিস্ট তৈরী করে সেই অনুযায়ী যারা যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন তাদেরকে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে।

আবেদনের শেষ তারিখ কত?

এখানে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পত্র জমা নেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে এবং তা চলবে আগামী ১৭ ই এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত। তাই যারা আবেদন করতে ইচ্ছুক ও যোগ্য তারা এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করে ফেলুন আর এই রকমই আরও সব নতুন নতুন চাকরি ও প্রকল্পের কারেন্ট আপডেট পেতে আমাদের চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত থাকুন।

MORE JOB NEWS: CLICK HERE

চাকরির সম্বন্ধীয় আরো বিস্তারিত খবরা খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হন।

Leave a Comment

Your email address will not be published.

Scroll to Top