
২৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিল চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2023)। আর মাত্র তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি আছে। এরই মধ্যে পরীক্ষা সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে আরও কড়া হতে চলেছে পর্ষদ। কিন্তু পরীক্ষার মাঝে হঠাৎ করে কেন এমন বদল? আসলে মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ইংরেজি প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ তোলেন, যা নিয়ে চূড়ান্ত আলোড়ন তৈরী হয়।
২৪ তারিখ বেলা ১২টায় যথারীতি পরীক্ষা শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী ১১.৪৫ মিনিটে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছিল। এর কিছু পরেই বিজেপি নেতা তাঁর টুইটারে অভিযোগ তোলেন ইংরেজি পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে! সাথে জুড়ে দেন ১৬ পাতার ইংরেজি প্রশ্নপত্রের ৩টি পাতার ছবি, যা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়।
সাইবার ক্রাইমের সাহায্য নিয়ে তদন্ত শুরু করে দেখা যায়, প্রশ্নপত্রের যখন ছবি তোলা হয়েছিল, তখন পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক শিক্ষিকারা হলের মধ্যেই ছিলেন। কোথা থেকে বিষয়টি ঘটেছে, তার সূত্র খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ব্যাপারটি তদন্তাধীন, তাই সম্পূর্ণ তথ্য সামনে না এলেও, জানানো হয়েছে, মালদহ থেকে এই কান্ড হয়েছে।
ঘটনাটির প্রসঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে এটিকে পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত বলে জানানো হয়। বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, এটি মোটেই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা নয়। এটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত অন্তর্ঘাত। পাশাপাশি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে আরও আর যাতে প্রশ্ন ফাঁসের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা না ঘটে তা সুনিশ্চিত করতে সোমবার আরও একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করলেন পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়।
সোমবার জারি হওয়া নতুন নিয়মে বলা হয়েছে-
১. এতদিন শিক্ষকদের উপস্থিতিতেই পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতর পরীক্ষার্থীরা আগে প্রবেশ করতেন। কিন্তু এবার পরীক্ষা কেন্দ্রের দরজায় মোতায়েন করা হবে পুলিশ কর্মী। তারা পরীক্ষার্থীদের কাছে কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস রয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত করবেন।
২. এবার থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের জানালা খুলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সহজেই গোটা শ্রেণীকক্ষ জুড়ে নজর রাখা সম্ভব হবে।
৩. পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতর কোনো অচেনা ব্যক্তি যাতে কোনওভাবেই ঢুকতে না পারে, সেই বিষয়ে পর্ষদ কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছে।
৪. নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা নির্দিষ্ট জায়গায় ফোন জমা রাখছেন কিনা, সেটা লগবুকে লিখে রাখতে বলা হয়েছে।
৫. পর্ষদের ধারণা, যে সকল পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন না, অর্থাৎ হাসপাতালে বসে বা আলাদা বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন, সেখানে বিধি-নিষেধ শিথিল হয়ে যাচ্ছে। তাই সেই সব স্থানে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ।
আশা করা হচ্ছে নিয়মের গেরো আরও আটোসাটো করার ফলে হয়ত বাকি পরীক্ষাগুলিতে আর প্রশ্নফাঁসের মতন লজ্জাজনক ঘটনা ঘটবে না।
এগুলোও পড়ুন-
💡 মাধ্যমিকে ফেল করলে পাশ করাবে তৃণমূল সরকার?
💡 এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা প্রথমবারের মতো চাপে প্রাইমারি শিক্ষকরা
💡 ৯ বছর বয়সেই গ্র্যাজুয়েশন পাশ করলো এই বালক